প্রকাশিত: ০৮/০৫/২০১৮ ৭:৩৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:১১ এএম

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার অনুদান দেবে বিশ্ব ব্যাংক। বিশ্ব ব্যাংকের সর্বশেষ বসন্তকালীন সভায় এ অনুদান প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে বলে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি গত রোববার বলেন, ‘শিগগির বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব নিয়ে তার ওপর অনুদানের পরিমাণ ঠিক করা হবে। এরপর সরকারের সঙ্গে এ অনুদানের জন্য বিশ্ব ব্যাংক চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।’
গত মাসে ওয়াশিংটনে ওই অনুমোদনের পর বিশ্ব ব্যাংক ইতোমধ্যে বাংলাদেশের কাছে অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি।
মাহমুদা বেগম বলেন, ওই চিঠিতে দাতা সংস’াটি বলেছে, রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বাসস’ান, স্বাস’্য, পরিবেশসহ তাদের যত রকমের ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে তা প্রস্তাব আকারে জানাতে হবে। একইসঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের জন্য খাদ্য, নিরাপদ পানি এবং তাদের বসবাসের জায়গা নিরাপদ করার ওপর গুরুত্বারোপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইআরডির বিশ্ব ব্যাংক উইংয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশ্ব ব্যাংকের ওই চিঠি পাওয়ার পর আমরা সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়কে চিঠি
দিয়ে তাদের প্রস্তাবনা চেয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে যাচাই-বাছাই করে সমন্বিতভাবে চূড়ান্ত প্রস্তাবগুলো আমরা বিশ্ব ব্যাংকের কাছে পাঠাব।
‘এরপর বিশ্ব ব্যাংক ওই কার্যক্রম পরিচালনায় এক বছরে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে সে অনুযায়ী অনুদানের অর্থ বরাদ্দ দেবে। তবে ওই অনুদান ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি ডলারের বেশি হবে না।’
বাংলাদেশের প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে বিশ্ব ব্যাংকের যদি মনে হয় ৪০ কোটি ডলারের কম লাগবে তাহলে বরাদ্দ কমে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
মাহমুদা বেগম জানান, বিশ্বে যেসব দেশে শরণার্থী রয়েছে তাদের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অনুদানের অনুমোদন আছে।
‘কিন’ বাংলাদেশের জন্য সেই অনুমোদন ছিল না। তাই গত মাসে অনুষ্ঠিত সভায় এ বিষয়ে অনুমোদন নিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যেসব দেশ শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলা করছে তাদের দেখলে বোঝা যায়, এ সমস্যা দ্রুত শেষ হবে না। তাই দীর্ঘ দিন ধরে মোকাবিলা করার মানসিকতা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করব। সে ভাবনা থেকে আমরা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ ঘর তৈরির প্রস্তাব করব। তবে দ্রুত পাঠিয়ে দিতে পারলে তো ভালো। তখন তাদের সেই ঘরে আমাদের স’ানীয় গৃহহীনরা বসবাস করতে পারবে। তবে খুব দ্রুত সময়ে আমরা রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে পাঠাতে পারব বলে মনে হয় না।’
মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় চার লাখ মানুষ কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছে। এরমধ্যে গত বছর আগস্টে রাখাইনে তাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হওয়ার পর আরও সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।
বিপুল সংখ্যক এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত